
Home দৃষ্টিপাত > সবজি ও মাছ চাষে কোটিপতি সুলতান
এই পৃষ্ঠাটি মোট 2134 বার পড়া হয়েছে
সবজি ও মাছ চাষে কোটিপতি সুলতান
বিদেশ থেকে ফেরার পর শূন্য হাতে শুরু করেছিলেন তিনি। স্ত্রী’র গহনা বন্ধক রেখে সেই টাকা দিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। সেই থেকে শুরু। যেখানে হাত দিয়েছেন সেখানেই সাফল্য পেয়েছেন। কঠোর পরিশ্রম আর নিষ্ঠার কারনে দুঃখের দিন শেষে এখন একজন কোটিপতি তালিকায় তার নাম। সবিজ ও মাছ চাষ করে আজ তিনি অগাধ সম্পদের মালিক। তার অধীনে এখন কাজ করেন শতাধিক নারী-পুরুষ। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে লোকজন আসছেন পরিশ্রমী এ ব্যক্তিটির সাফল্য দেখতে। ফরিদপুর জেলার মধ্যে সবজি ও মাছ চাষে ব্যাপক সাফল্য অর্জনকারী এ ব্যক্তিটি হচ্ছেন শহরতলীর গেরদা ইউনিয়নের সৈয়দ ইয়াদগার সুলতান। ফজরের আজানের পর থেকেই ছুটে যান মাঠে, থাকেন অনেক রাত পর্যন্ত। প্রতিটি ক্ষেত ও পুকুরে গিয়ে তিনি সবকিছু নিজেই তদারকি করেন। ইয়াদগার সুলতানের স্বপ্নটা ছিল ভিন্ন ধরনের। সংসারের স্বচ্ছলতা আনতে আজ থেকে ২০ বছর আগে পাড়ি জমিয়েছিলেন সৌদিআরবে। সেখানে তিনি একটি দোকানও দিয়েছিলেন। কিন্তু স্থানীয়রা তার দোকানটি কিনে নেবার পর টাকা না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। সিদ্ধান্ত নেন দেশে ফিরে আসবেন। সঞ্চয়কৃত কিছু টাকা নিয়ে দেশে ফিরে আসেন। সে টাকা দিয়ে কিছু জমি কেনেন। ফলে তার হাতে ছিলনা কোন নগদ টাকা। সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে থাকেন। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী পরিবারের সন্তান হওয়ায় কারো কাছে হাত পাতেননি। উপায়ন্তর না দেখে স্ত্রী’র গহনা বন্ধক রেখে পুকুর লিজ নিয়ে শুরু করেন মাছ চাষ। আর পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। কঠোর পরিশ্রম করে আজ তিনি ৩০ বিঘা জমির মালিক। এলাকাতে গড়ে তুলেছেন একটি মার্কেট। সেখানে দোকান রয়েছে ২০টি। মাছ চাষ করার জন্য নিজেরই পুকুর রয়েছে ৮টি। তার নিজস্ব জমিতে এবার তিনি আবাদ করেছেন ধান, সরিষা, গমসহ নানা ধরনের সবজি। পুকুর পাড়ে চাষ করছেন পেপে’র। কয়েক মাস পর পর পেপে বিক্রি করেই আয় করেন লাখ টাকা। সবজি বিক্রি করে এখন পর্যন্ত তিনি কয়েক লাখ টাকা আয় করেছেন। তার ক্ষেতে লাগানো লাল শাক, পালং শাক, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ সব সবজিই কীটনাশকমুক্ত। নিজেই সার তৈরী করে জমিতে প্রয়োগ করেন। ফলে তার সবজির চাহিদা রয়েছে জেলাজুড়ে। সুলতানের নিজস্ব যে ৮টি পুকুর রয়েছে যেখানে তিনি বিভিন্ন ধরনের মাছের চাষ করেন। ফসল এবং মাছ ও মাছের পোনা বিক্রি করে তার আয় বছরে কমপক্ষে ১৫ লাখ টাকা। গত বছর সবকিছু বাদ দিয়ে তার লাভ ছিল ১০ লাখ টাকার মতো। একসময় যিনি সংসার চালাতে গিয়ে হিশশিম খেতেন এখনই তারই অধীনে চাকুরী করে শতাধিক ব্যক্তি সংসার চালাচ্ছেন। মেধা ও কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে কেউ কাজ করলে এবং যে কোন কাজকে ঘৃনা না করে করতে পারলে সাফল্য ধরা দেবে এমনটি বিশ্বাস করেন সুলতান। কৃষি ও মাছ চাষে বিস্ময়কর সাফল্য অর্জনকারী সুলতান ফরিদপুরের একজন সফল ব্যক্তিদের মডেল হিসাবে পরিচিত।
ছবি ও তথ্যসূত্র: ফরিদপুর কন্ঠ রিপোর্ট